আর্য সামন্তের কবিতা

ছোট থেকেই আমার ভেতরে একটা কবরস্থান বেড়ে উঠছে। অপমৃত্যু ঘটলেই মাটির নিচে পুঁতে ফেলা হয় সে সব দাগ। তার উপর রাশ রাশ মাটি এসে কবরের বুক চেপে বসে। সপ্তাহান্তে ফুল চড়িয়ে যাচ্ছে কেউ কেউ। অপ্রাসঙ্গিক অতীত বলেই বাড়ি ফেরার পথে কবরস্থানটা এড়িয়ে যাও তুমি। সেদিন কি খেয়ালে ঢুকে এলে হুড়মুড় করে, ঠিক শিমুল গাছটার নিচে দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরাচ্ছ। ঘোলাটে ধোঁয়া ফুসফুসে চেপে বসছে আমার। হাঁফিয়ে উঠছি, তোমার সামনে গল্পপাঠের দেখনদারি কণ্ঠনালীতে আটকে যাচ্ছে আমার। তোমার জানুর কাছে মাথা রাখতে চাইছি, হাসছো তুমি, সিগারেটের শেষ জ্বলন্ত টুকরোটা চিপে দিচ্ছ আমার উরু সন্ধিতে। চিৎকার করার আগেই খেয়াল করলাম আবার একটা কফিন ঢুকছে মাটির তলায়, রাশ রাশ মাটি ঝাঁপিয়ে পড়ে টুঁটি চিপে ধরছে আমার। গুঁড়ো গুঁড়ো ভেসে যাচ্ছে শিমুল ফুলের রেণু। শৈশবে একটা চাবুক কিনেছিলে তুমি,সুযোগ বুঝে সেটা বসিয়ে দিচ্ছ আমার পিঠে। কালশিটে দাগ দেখে ফুঁফিয়ে উঠছে আমার ভেতরের গেঁয়ো কিশোর,সে মাছরাঙার ঠোঁট দেখেছে, এত ধারালো জানতো না। ধূমপান শেষে পালাতে চাইছো তুমি, পারছ না, শিমুলের শিকড় আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরছে তোমার পা। ছাড়ানোর উপায় নেই,মনে মনে খিস্তি আওড়াতে আওড়াতে গুষ্টি উদ্ধার করেছ আমার, যার সদস্য তুমি নিজে। ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে তোমায় খুঁজতে বেরিয়েছে আমার ভাই।

ততক্ষণ আরেকটা সিগারেট ধরাবে প্লিজ?

Website | + posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *