সপ্ না সাহা
তারপর ঘুম পায়, অনেকটা ঘুম।
প্রতিদিন কতো কতো পথচলা
প্রতিদিন কতো কতো ছায়ামাখা
ক্লান্তি বা অবসাদের ঘুম নয়
ভালোবাসার ঘুম জড়িয়ে ধরেছে ওদের
হালকা হালকা ভাসছে কতো কথা
দোষী খুঁজতে সবাই যখন ব্যস্ত
আমি তখন তাকিয়ে দেখি
মাঠের ঠিক মাঝখান বরাবর
আজকের সূর্য হাবিবা চাচির
নাকফুল হয়ে বিষাদ ছুঁয়ে
বিদায় নিচ্ছে
সেই দুদিন আগে বাবার গলাটা
শুনতে শুনতে ফোন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
বাবা যেন কি সব বলছিল
রেললাইন-পথহাঁটা-ক্লান্তি-শুকনো রুটি
আরও কতো কিছু —
বাবার গলায় কথা চাপা কান্না
বাবার গলায় আতঙ্কের ছাপ
বাবা আর রহিম চাচা এখন পরিযায়ী
এবার ঈদের আগেই রহিম চাচার বাড়ি ফেরার কথা—
গতবারের বিরিয়ানির স্বাদ আজও মুখে লেগে আছে
এই সেদিন দাওয়ায় বসে
মা আর হাবিবা চাচির গল্পের শেষটুকু
কানে গিয়েছিল
হাবিবা চাচি মাকে বলছিল-
এবার তোমার দেওর ঈদে বাড়ি আসার সময়
আমার জইন্য একটা পাথরের নাকফুল আইনবো কইছে
মায়ের সেকি হাসি — চাচি আর মায়ের মেয়েলি আহ্লাদে আরেকটি শেষ বিকেলের সূর্য যেন একটু বেশি রাঙা হয়ে উঠেছিল।
রহিম চাচা আর আমরা পাশাপাশি ঘর।
গত দুদিন ধরে বাবার আর ফোন নেই
শেষ বাক্যে বাবা বলেছিল–
এই মাসে টাকা পাঠাতে পারবে না
বাবা, আমাদের টাকা পাঠাতে হবে না
তোমরা তাড়াতাড়ি ঘরে ফিরে এসো —
আমরা আর কিছু চাইনা–
পরিযায়ী পাখিরাও তো প্রতিবছর ফিরে আসে
রহিম চাচা, তুমি কেন আর আসবে না