সঙ্কেত হক
রকেট তৈরির প্রযুক্তি (Technology) ঠিক কবে থেকে এলো – এ নিয়ে নানা মুনির নানা মত। কেউ বলেন গত শতাব্দীর তেরোর দশকে চীন সবার আগে এই প্রযুক্তি এনেছিলো। আমাদের দেশের Department of Archaeology, Heritage and Museums-এর বিশেষজ্ঞরা গবেষণা করে জানান আঠারোর দশকে মহীশূরের সুলতান টিপু ইংরেজের বিরূদ্ধে লড়াইতে রকেট ব্যবহার করেছিলেন। তারপর এই প্রযুক্তি ব্রিটেনে পাচার হয়েছিলো। বিশ শতকের গোড়া থেকে ব্রিটেন, রাশিয়ায় এ-নিয়ে কাজ চলতে থাকে। পরে জার্মানিও যোগ দেয়। কিন্তু রকেট নিয়ে গবেষণা তুঙ্গে ওঠে গত বিশের দশকে। এই সময় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র আর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই চলেছিলো। নিউক্লিয় বোম তৈরির কায়দা তখন এই দু-দেশই জানতো। সোভিয়তের পশ্চিম দিক ঘেঁষে ছিলো আমেরিকার বন্ধু দেশ গুলো। সোভিয়েত ভাবলো – আমেরিকা চাইলে এদের জমি ব্যবহার করে তার ওপর বোমা ফেলতে পারে। কিন্তু উল্টোটা করা অত সোজা নয়। বোমারু বিমানে চরে অতলান্তিক মহাসাগর পেরিয়ে আমেরিকায় বোমা ফেলে আবার ফেরত আসা কি মুখের কথা? তাই তারা সিদ্ধান্ত নিলো দূর পাল্লার (Range) ক্ষেপণাস্ত্র (Missile) বানাবে। আর সেই ক্ষেপণাস্ত্র এমন হবে যা কিনা নিউক্লিয় বোম বইতে পারে। একবার ছুঁড়ে দিলে সুদূর সাগর পাড়ি দিয়ে নির্দ্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত করা যায়। হালের ক্ষেপণাস্ত্র আসলে রকেটের (Rocket) আধুনিক রূপ। জটিলতা বাদ দিয়ে আকাশে রকেট চালনার (Propulsion) বিজ্ঞানটা এই প্রবন্ধে সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়েছে।
মনে করি, মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো দর্শক দেখছে যে একটা ভরযুক্ত (Massive) বস্তুকণা (Particle) স্থির অবস্থায় (At rest) আছে। এখন তার ভর m। এবার কণাটি একদম সোজা (Linear) পথে চলতে শুরু করলো। ধরা যাক, ওই দর্শকের সাপেক্ষে গতির মান v। শূন্য মাধ্যমে (vacuum) আলোর গতির(সেকেণ্ডে ১ লাখ ৮৬ হাজার মাইল) তুলনায় v অনেক ছোট। তাহলে, দর্শকের সাপেক্ষে কণাটার রৈখিক Momentum(p) = mv।
ধরা যাক, দর্শক এও দেখলো যে সময়ের সঙ্গে p-এর মান এবং দিক বদলাচ্ছে না। এই অবস্থায় গতি নিয়ে মহাবিজ্ঞানী নিউটনের ২য় সূত্র[১] অনুযায়ী প্রমাণ করা যায় কণাটার ওপর বাইরে থেকে কোনো বল (External Force) কাজ করছে না। একে বলা হয় Momentum-এর সংরক্ষণ(Conservation) নীতি। একটার পরিবর্তে অনেকগুলো কণার সমবায় (System) নিলে পুরো System-এর জন্য এটাই নিয়ম (Law)। তাহলে দেখা যাক এই নিয়ম দিয়ে রকেটের কি-করে ওড়ে ব্যাখ্যা করা যায় কিনা।
রকেটের মোট ভর বার করতে গিয়ে খালি রকেটের ভর(Mরকেট) নিলে চলে না। এর সাথে তার পেটের মধ্যে যে জ্বালানি (Fuel) ভরা থাকে, তার ভরও(mজ্বালানি) ধরতে হয়। ভাবা যেতে পারে জ্বালানি সমেত খালি রকেট মিলে একটা System তৈরি করে।
অর্থাৎ, System-এর মোট ভর(Mi)= Mরকেট+mজ্বালানি।
মনে করা যাক, মাটিতে দাঁড়িয়ে আমরা দেখলাম System-টা স্থির হয়ে মাটির তলের সাথে অনুভূমিক (Horizontal) ভাবে আছে। তবে, আমাদের সাপেক্ষে প্রাথমিক (Initial) ভাবে System-এর মোট MomentumpSystemt=0=0।
এবার রকেটের Engine চালু করা হলো। ফলে তার জ্বালানি একটা নির্দিষ্ট হারে (mজ্বালানি=-mজ্বালানিΔt) পুড়তে শুরু করে। এভাবে চলতে থাকলে একটা বিশেষ সময় পর আর কিচ্ছুটি থাকবে না(mজ্বালানি=0)। এই সময়টাকে(tB) বলা হয় রকেটের দহন (Burn) সময়।
কল্পনা করা যাক, ইঞ্জিন চালু করার পর থেকে t(<tB) সময় ধরে খানিকটা জ্বালানি (mজ্বালানি) পুড়েছে।
তাহলে ঠিক এই মুহূর্তে র্ System-এর ভর(Mt)= Mi+mজ্বালানি= Mi-mজ্বালানিΔt
MiMt এই অনুপাতটাকে বলা হয় রকেটের ভর অনুপাত(R)। যেহেতু Mt-এর মান Mi-এর চেয়ে কম, R-এর মান ১-এর বেশি। যত সময় যায়, Mt একটানা কমতে থাকে। ফলে R বাড়তে থাকে।
জ্বালানি পোড়ার জন্য একসাথে দুটো ঘটনা ঘটে। এর ফলে তৈরি হওয়া গরম গ্যাস প্রচণ্ড গতি নিয়ে System থেকে বাইরে বেরিয়ে (Exhaust) আসে। আর আমাদের সাপেক্ষে রকেটও সামনের দিকে একদম সোজাসুজি এগোতে আরম্ভ(সূত্র: ছবি – ১) করে।
একক সময়ে যে পরিমাণ জ্বালানি কমে, ঠিক একই পরিমান গ্যাস বেরোয়। তাহলে ইঞ্জিন চালু হওয়ার Δt সময় পরে আবার আমরা পুরো System-এর MomentumpSystemt=Δt হিসেব করতে পারি।
এখন, বাকিটুকু জ্বালানি সমেত রকেটের Momentum = Mtvরকেটমাটি
[যখন, vরকেটমাটি হলো আমাদের সাপেক্ষে রকেটের গতি]
আবার, System থেকে বেরিয়ে আসা গ্যাসের Momentum = mজ্বালানিvগ্যাসমাটি
[যখন, vগ্যাসমাটি হলো আমাদের সাপেক্ষে গ্যাসের গতি]
∴ pSystemt=Δt=Mtvরকেটমাটি+mজ্বালানিvগ্যাসমাটি
এই পুরো ঘটনায় বাইরে থেকে System-কে কেউ ধাক্কা (Push) দিচ্ছে না। তাই, Momentum-এর সংরক্ষণ নীতি অনুযায়ী: pSystemt=Δt= pSystemt=0
অর্থাৎ, Mtvরকেটমাটি+mজ্বালানিvগ্যাসমাটি=0
অন্যদিকে, আপেক্ষিক (Relative) গতির সংজ্ঞা থেকে রকেটে বসে থাকা কোনো দর্শকের সাপেক্ষে গ্যাসের গতি(-vগ্যাসরকেট))=vরকেটমাটি-vগ্যাসমাটি
এই মান সব সময় একই থাকে। এখান থেকে দু-লাইন অঙ্ক কষলে দেখা যায়:
রকেটের ওপর প্রযুক্ত ঘাত বল (Thrust) = vগ্যাসরকেটmজ্বালানি
ঘাতটা প্রয়োগ করছে রকেট থেকে বেরিয়ে আসা গ্যাস। এই বলের কারণে রকেট নিজে-নিজে সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
শুনে খটকা লাগলে বাড়িতে হাতের কাছে থাকা কয়েকটা জিনিস দিয়ে চট করে একটা Experiment করে ফেলা যেতে পারে। ধরা যাক, ঘরের ভিতর দুখানা কাঠের চেয়ারকে কিছুটা দূরে উল্টোদিকে মুখ করে রাখা হলো। এরপর, তাদের মধ্যে একটা শক্ত-পোক্ত সুতো বেঁধে দেওয়া হলো। একটা বড় বেলুনে বেশ অনেকটা হাওয়া ভরে তার মুখটা ভালো করে আঁটা হলো। দুটো প্লাস্টিকের ছোট্ট চোঙের মত অংশকে Cello tape দিয়ে ফোলানো বেলুনের ওপর দু-জায়গায় চিপকে দেওয়া হলো। এবার ওই চেয়ারে যে সুতো বাঁধা ছিলো, তার একদিক খুলে চোঙ গুলোর মধ্যে দিয়ে গলিয়ে দেওয়া হলো। এরকম অবস্থায় বেলুন পুরো শূন্যে ঝুলে(সূত্র: ছবি-২) থাকবে। এই সময় যদি বেলুনের মুখ হালকা খুলে দেওয়া হয়, তাহলে দেখা যাবে – পেছন থেকে ভুসসস… করে হাওয়া ছাড়তে ছাড়তে বেলুন এক চেয়ার থেকে আরেক চেয়ারের দিকে ছুটছে। একই ঘটনা রকেটের ক্ষেত্রেও ঘটে।
আবার তাহলে আসল আলোচনায় ফেরা যাক। রকেটের ওপর প্রযুক্ত বলের ঘাত (Impulse) থেকে কলনবিদ্যার (Differential Calculus) সাহায্যে বার করা যায়:
আমাদের সাপেক্ষে রকেটের গতি(vরকেট)= -vগ্যাসরকেটln (১R )
ln-এর ধর্ম অনুযায়ী R-এর মান বাড়লে, রকেটের গতিও বাড়তে থাকে। ঠিক দহন সময়ে পৌঁছে(t=tB) পুরো System-এর ভর শুধুমাত্র রকেটের ভরের সমান(Mt= Mরকেট ) হয়ে যায়। এটায় ওর সর্বনিম্ন (Min.) মান। স্বাভাবিকভাবে, ওই মুহুর্তে R-এর মান সর্বোচ্চ (max.) হয়। তাহলে এই সময় রকেটের গতিও চরমে পৌঁছবে। ইতিমধ্যে সব জ্বালানি শেষ। তাই, ফাঁকা রকেটের ওপর আর কোনো ঘাত কাজ করে না। রকেট তখন ঐ গতিতেই চলতে থাকে।
একটা উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করা যেতে পারে।
ধরা যাক, একটা রকেট-জ্বালানি System নেওয়া হয়েছে যার Mi = ১২ টন। এর মধ্যে শতকরা ৬০ ভাগ রকেটের নিজের, বাকিটা জ্বালানির। মনে করা যাক, mজ্বালানি = সেকেণ্ডে ৪৮ কেজি। তবে, অঙ্ক বলছে tB-র মান হবে ১.৬৭ মিনিট।
ছবি – ৩ |
vগ্যাসরকেট = সেকেণ্ডে ২ কি.মি. হলে রকেটে প্রযুক্ত ঘাত আর তার প্রাথমিক ওজনের অনুপাত(r) হয় ০.৮। এই অবস্থায়, প্রতি একক ভরের জ্বালানি পোড়াতে যদি রকেটের ওপর একক ঘাত কাজ করে[২], তাহলে ছবি–৩-এ স্পষ্ট ভাবে দেখানো আছে R-এর মান বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিভাবে রকেটের গতি পাল্টাচ্ছে। tB-তে পৌঁছে প্রতি সেকেণ্ডে রকেটের গতি হবে ৩৩৫২ ফুট। ছবিতে এটাও দেখানো রয়েছে রকেটের গতি বাড়ার সঙ্গে অবশিষ্ট জ্বালানির শতকরা পরিমাণ কিভাবে কমে যাচ্ছে।
ছবি – ৪ |
এবার দেখা যাক রকেটটাকে মাটি থেকে খাড়া ভাবে (Vertically) উঠোলে কি হয়। এখন আর বলা যায় না যে System-এর ওপর বাহ্যিক ভাবে কোনো বল কাজ করছে না(সূত্র: ছবি – ৪)। পৃথিবীর অভিকর্ষ বল (Gravity) আছে। তাছাড়া বাতাসের বাধা (Air Drag) তো আছেই। অভিকর্ষ বল System-এর ভরের ওপর নির্ভর করে। যেহেতু সময়ের সঙ্গে System-এর ভর কমতে থাকে, তাই তার ওপর অভিকর্ষ বলের প্রভাবও ক্রমশ: দুর্বল হয়ে আসে। অন্যদিকে, রকেটে প্রযুক্ত ঘাত পুরোটা সময় একই (Const.) থাকে। তাহলে একটা সময় নিশ্চয় আসে যখন এই ঘাতটা উল্টোদিকে কাজ করা সব বাহ্যিক বলের মোট পরিমাণকে ছাপিয়ে যায়।
ছবি – ৫ |
আগের রকটের জন্য এ-সব ধরে অঙ্কটা আবার কষলে[৩] কি পাওয়া যাবে সেটা ৫ নং ছবিতে দেখানো হয়েছে। খুঁটিয়ে দেখলে বোঝা যাচ্ছে ইঞ্জিন চালু হওয়ার প্রায় ১.৫৭ মিনিট পরে রকেট মাটি ছেড়ে উঠতে আরম্ভ করেছে। মোট জ্বালানির কেবল ৬ শতাংশ তখনও ব্যবহার হয় নি। সব জ্বালানি শেষ হলে আমাদের সাপেক্ষে প্রতি সেকেন্ডে রকেটের গতি হয় ৬৪.৭৪ ফুট মাত্র ।
পৃথিবীর পিঠে (Surface) থাকা একটা ঢিলকে আকাশে যত জোরেই ছোঁড়া হোক না কেন, অভিকর্ষ বলের জন্য কিছু সময় পরে সেটা আবার মাটিতে নেমে আসে। নিউটনের মহাকর্ষ তত্ত্ব অনুযায়ী একমাত্র তখনই ঢিলটা অভিকর্ষের টান থেকে মুক্ত হয়ে পুরোপুরি পৃথিবীর বাইরে চলে যায় যদি একে সেকেন্ডে ৬.৯৬ মাইল বা তার বেশি গতিতে ছোঁড়া হয়। একে আমরা মুক্তি (Escape) বেগ বলি। বোঝাই যাচ্ছে, আমাদের কল্পনা করা রকেটের গতি এর অনেক নীচে। তাহলে গতি বাড়ানোর উপায় কি? অবশ্যই R-এর মান যথেষ্ট বাড়াতে হবে। এর জন্য System-এ জ্বালানির ভর যতটা পারা যায় বেশি করতে হবে।
বিষয়টা তলিয়ে ভাবার জন্য আবার একটা উদাহরণ নেওয়া যেতে পারে।
মনে করা যাক, এমন System বানানো হয়েছে যার Mi=৩০০০ টন। এর মধ্যে মাত্র ১ শতাংশ ভর ফাঁকা রকেটের। বাকিটা জ্বালানি। mজ্বালানি = সেকেণ্ডে ১৫ টন
ছবি – ৬ |
ধরা যাক, vগ্যাসরকেট-এর দুটো মান নেওয়া হলো: প্রতি সেকেণ্ডে ৩ কি.মি. এবং ৪.৫ কি.মি.। ফলে r-এর দুটো আলাদা মান পাওয়া যাবে। প্রতিটার ক্ষেত্রে ছবি–৬-এ স্পষ্ট ভাবে দেখানো হয়েছে একক ভরের জ্বালানির জন্য যদি রকেটের ওপর একক বল কাজ করে তাহলে তার গতি R-এর সঙ্গে কিভাবে পাল্টাচ্ছে।
r | vমুক্তি পেতে প্রয়োজনীয় সময় (মিনিট) | ওই সময়ে System-এ বেঁচে যাওয়া জ্বালানির শতকরা পরিমান |
১৫০ | ৩.২৯ | ০.২৬ |
২২৫ | ৩.১৫ | ৪.৬ |
ছক – ১ |
১-নং ছক থেকে দেখা যাচ্ছে এই রকেটে r-এর মান কম হলে Isp-ও কম হয়। ফলে মুক্তি বেগ পেতে তার কিছুটা সময় লাগে। তখন জ্বালানি প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু, r বেশি হলে, আগের চেয়ে একটু কম সময়ে রকেট মুক্তি বেগকে ধরে ফেলে। শুধু তাই নয়,এর পরেও তার মধ্যে অনেকটা জ্বালানি বেঁচে থাকে, যেটা দিয়ে সে তার গতিকে আরও বাড়াতে পারে।
পঞ্চাশের দশকে সোভিয়েত প্রযুক্তিবিদরা ঠিক এই কাজটাই করেছিলেন। রকেটের গতি বাড়াতে বাড়াতে তারা মুক্তি বেগের চেয়ে বেশি করে ফেলেছিলেন। সেটা দিয়ে তারা মহাকাশে পাঠিয়েছিলেন স্পুৎনিক-১, সভ্যতার ইতিহাসে প্রথম কৃত্রিমভাবে (Artificial) তৈরি উপগ্রহকে (Satellite)। তামাম বিশ্বের মানুষ এই ঘটনায় নড়ে চড়ে বসেছিলো। তারপর আরও উন্নত রকেট বানানোর পরিকল্পনা হতে লাগে। একটা সময় শুধু কল্পবিজ্ঞানের গপ্পে মানুষ পৃথিবী-গ্রহের বাইরে কোথাও সফর করতে পারতো। ষাটের দশকে মানুষ শুধু মহাকাশে নয়, পা ফেলেছে চাঁদের মাটিতেও। যে যানটার গবেষণা শুরু হয়েছিলো নেহাত যুদ্ধ জয়ের খাতিরে, আজ সেই রকেটের দৌলতেই কল্পনা পরিণত হয়েছে বাস্তবে।
আমেরিকায় এক বিদ্যালয়ের ছাত্র হোমার হিকাম আকাশে স্পুৎনিক-কে দেখতে পেয়ে স্বপ্ন দেখতো ভবিষ্যতে রকেট বানানোর। বন্ধুদের সাথে মিলে কত-না ঝড়-ঝাপটা সামলে শেষমেশ হোমার কাজটা হাসিল করেছিলো। বড় হয়ে তিনি হন বিখ্যাত মার্কিন মহাকাশ সংস্থা NASA-র প্রযুক্তিবিদ। সেখানে তিনি মহাকাশচারিদের (Astronaut) তালিম দিতেন। আমাদের এখানে হোমারের মত বহু কিশোর-কিশোরী আছে। তাদেরও ইচ্ছে ভবিষ্যতে রকেট-বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করার। এই লেখা পড়ে যদি তারা সামান্য হলেও উৎসাহ পায়, তবে সেটুকুই লেখকের পুরস্কার।
…………………………………………………………………………………………………..
কৃতজ্ঞতা স্বীকার:
১। Wings of Fire An Autobiography by APJ Abdul Kalam with Arun Tiwary (Chapter 4: Achievers)
২। Cold War – Sputnik [E8/24] – YouTube
৩। 8.01x – Lect 17 – Impulse, Rockets – YouTube
৪। ‘বিজ্ঞানের মনোরঞ্জক খেলা’, আইয়র য়ুশিল (বেলুন হয় জেট বিমান)
৫। Mechanics & Thermodynamics of Propulsion by Hill & Peterson. (Chapter 10, Section 10.3: VEHICLE ACCELERATION)
————————————————————-
টীকা:
[১] বাহ্যিক বলFExt.=dpdt
[২] রকেটের ওপর কাজ করা আপেক্ষিক ঘাত(Isp) = রকেটে প্রযুক্ত ঘাতWগ্যাস
[যেখানে, Wগ্যাস=mজ্বালানিg]
বোঝায় যাচ্ছে Isp-র মান বাড়াতে গেলে vগ্যাসরকেট -কে বাড়াতে হবে।
∴vরকেট=(Ispg)lnR = ln R [যদি, Ispg=১ হয়]
[৩] ধরে নেওয়া হয়েছে সমুদ্রপৃষ্ঠে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান(g) প্রতি বর্গ সেকেণ্ডে ১০ মিটার।
বাতাসের বাধা জনিত বল = AρCdvরকেট22
[এখানে, রকেটের সামনের অংশের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল(A)= ১ বর্গ মিটার;
বাধার coeff.(Cd)=০.২;
h মিটার উচ্চতায় প্রতি ঘন মিটারে বাতাসের ঘনত্ব ((h)) = ae-bh1.15 কেজি
[যেখানে, a = ১.২ এবং b = ২.৯ ১০-৫ ]
বোঝায় যাচ্ছে, সমুদ্রপৃষ্ঠ(Sea level) থেকে উচ্চতা বাড়লে বাতাসের ambient ঘনত্ব কমে যায়। ফলে বাতসের বাধাও কম হয়। আবার, রকেটেরর গতি বেশি হলে বাধা বেড়ে যায়।]