বিচ্ছেদের চাইতেও কষ্ট বেশি

আতিক আনন্দ কর

দূরের শহরে ঘরের ভেতরে

তুমি বসে আছ কোয়ারেন্টাইনে।

ফায়ারপ্লেসের নিভু নিভু আগুনে শুনছ মোজার্ট,

হাতে থেকে ক্ষয়ে পড়ছে সিগারেট, স্মৃতির কিছু কালো অধ্যায়।

যে স্মৃতির ভেতরে আমি এক ঘৃণ্য কয়েদি।

যাকে ভুলের জন্য দিয়েছ নরকে যাবতজীবন।

ঘর পলাতক কিশোর তোমার স্পর্শে হয়ে প্রথম উঠেছিলো পুরুষ,

শিখিয়ছিলো নারী শরীর এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি,

যেখানে ঝাঁপ দিতে হয় মৃত্যু বাসনায়।

সংসার-সংসার খেলা জমে উঠেছ বেশ,

তুমি লিলিথ আমি অ্যাডাম,

যাদের অস্তিত্ব নেই ধর্মে,

যাদের অস্তিত্ব নেই রাষ্ট্রে।

দুটি অসম বয়সী মানুষ ভালোবাসে একে অপরের বিষাদী ঘুম!

পুরুষ বরাবরি বহুগামি, বরাবরি নির্লজ্জ।

না হলে অ্যাডাম কখনো লিলিথ ভুলে স্পর্শ করত না ইভের স্তন!

লিলিথের যে সন্তান জন্মানো না অ্যাডামের পাপে,

সেই সন্তান আজ ঠুকরে খায় পিতার হৃদপিণ্ড।

যে পিতার কাঁধে চেপে যায় সন্তান হত্যার দায়,

তাকে তোমরা কষ্টের গল্প কি শুনাও?

মৃত্যু তুমি হেঁটে আসো সৈনিক বেশে,

মাথায় ঠেকিয়ে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্কে উড়িয়ে দাও পারভারশনে জাগ্রত মস্তিষ্ক!

একবিংশ শতাব্দীর শেষ লগ্নে ভালোবাসা এক দুরন্ত মেঘ

যাকে আটকে রাখা যায় না, করা যায় না বাক্সবন্দি!

ভুলের মিছিলে শেষ পাখিটা গেয়ে উঠে জীবন হারানো গান।

প্রিয়তমা আমার,

তুমি এক শহরে বসে ফেলছ ঘৃণার থুথু,

রাতের বাসি ঘুম সেরে ভালোবাসছ অপর শরীর।

আমি আরেক শহরে বসে লিখছি হারানোর কবিতা,

পাশে শুয়ে থাকা নারীর বুক মেপে হাতে,

ভাবছি এখানে শুধু একদলা মাংস, একদলা চর্বি!

আমার হৃদয় দরকার,

আমার কবিতা দরকার,

আমার ঘুম দরকার।

চিতায় উঠে বসে থাকি, কবরে শুয়ে থাকি শবের মতো।

বিচ্ছেদের চাইতেও কষ্ট বেশি, রোজ নিজেকে নিজ হাতে হত্যা করার ক্ষত!

Website | + posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *